চট্টগ্রামশীর্ষ নিউজ

আমার দোকানটা ভেঙে দিছে, টিভি নিয়ে গেছে, স্ত্রীকে মারধর করছে’

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:

‘কাদের সাথে ঝামেলা হয়েছে আমি জানি না। তবে গতকাল জুলধায় হামলার শিকার হওয়া আওয়ামী লীগ নেতা মান্নান সাহেবের লোকজন এসে আমার দোকানটা ভেঙে দিছে। দোকানে থাকা টিভি নিয়ে গেছে। আমার স্ত্রীকে মারধর করেছে। আমি গরীব মানুষ আমি এখন কি করব। এই দোকানটা ভেঙ্গে দেওয়ায় আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। এখন কেমনে কী করব, চলব কিভাবে কিছুই বুঝি না।’

চট্টগ্রাম কর্ণফুলী উপজেলার জুলধা চৌধুরী পাড়ায় গতরাত ১০ টায় একদল দুর্বৃত্তদের হামলায় চায়ের দোকানদার মোঃ মনজুর আলমের দোকানটি ভেঙ্গে দেয়ায় ক্ষোভে এসব কথা বলেন ভুক্তভোগী দোকানদার। এসময় থানায় কোনো অভিযোগ করবে কিনা জানতে চাইলে দোকানদার বলেন, কি অভিযোগ করব আমরা গরীব মানুষ। নুরুল হক চেয়ারম্যান এসে সকালে দেখে গেছেন সব। তিনি মান্নান সাহেবের সাথে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।

ঘটনা সুত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার বিকাল ৫ টার দিকে কর্ণফুলীর জুলধা ৯নং ওয়ার্ডের চৌধুরী পাড়ায় এক সালিশী বৈঠকে গেলে স্থানীয় লোকজনের হামলার শিকার হন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল মান্নান প্রকাশ এপিএস মান্নান। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে উদ্ধার করে সাউথ চট্টগ্রাম হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ সময় চিকিৎসক চন্দন দাশ জানান, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তিনি আহত হয়েছেন। মাথায় ৮টি ও পিঠে ৩টি সেলাই হয়েছে।

এ ঘটনার জেরে ওই হামলার ৫ ঘন্টা পরেই এক দল দুর্বৃত্ত দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে জুলধার চৌধুরী পাড়ায় মোঃ মনজুর আলম এর চায়ের দোকান, ক্বারী হাফেজ এর ফার্মেসী এবং মাজার বাড়ীর আব্দুর রহিম ও ওসমান এর ঘরবাড়ি ভাঙচুর করেন। ঘটনার পরপরেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছেন বলে স্থানীয় সুত্রে জানায়। অনেকে এ ঘটনার সাথে শিকলবাহার চেয়ারম্যান পুত্র জড়িত বলে মৌখিক ভাবে অভিযোগ করলেও এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত থানায় কোন পক্ষ মামলা বা অভিযোগ হয়নি বলে জানা যায়।

আমাদের প্রতিবেদক দোকানদারের কাছে গিয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী দোকানদার বলেন, ‘কী বলব, সব তো শেষ হয়ে গেছে। এটাই আমার আয়ের মাধ্যম ছিল, সব শেষ। কান্নায় ভেঙে পড়েন মনজুর। পাশে দাঁড়ানো একজন তাকে সান্ত্বনা দেন, ‘তবুও আপনার মালের ওপর দিয়ে গেছে। জানটা তো রক্ষা পাইছেন।’

জুলধার চেয়ারম্যান নুরুল হক জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেছি দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে। ঘটনা সত্য। যারা করেছে তাদের সাথে আমি কথা বলে সমাধান করার আশ্বাস দিয়েছি।

কর্ণফুরী থানার ওসি মোঃ দুলাল মাহমুদ জানান, তিনি ছুটিতে ছিলেন তাই ঘটনাটি জানেন না। তবে ঘন্টা খানেক পরে থানায় যাবেন। থানায় গিয়ে সকল ঘটনার খোঁজ খবর নিয়ে দোকান ভাংচুরের বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন বলে তিনি জানান।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button