লাইফস্টাইল

ডেঙ্গু রোগীর খাদ্য ব্যবস্থাপনা

ডেঙ্গুজ্বর হলে খাবার-দাবার ও পুষ্টির দিকে খেয়াল রাখা জরুরি। বাড়িতে চিকিৎসা নিলে নিচের বিষয়গুলো খেয়াল রাখুন। ডেঙ্গুজ্বর হলে এবার প্ল্যাটিলেট কমে যাওয়া ছাড়াও রক্তচাপ কমে গিয়ে রোগী শকে চলে যাচ্ছে। কারও কারও ক্ষেত্রে হেমোরেজও হচ্ছে। আবার কারও ক্ষেত্রে প্ল্যাটিলেট কাউন্ট কমলেও তা সহনীয় পর্যায়ে থাকছে। ডেঙ্গুজ্বরের কোনো ভ্যাক্সিন বা অ্যান্টিবায়োটিক নেই। তাই প্রচলিত চিকিৎসা হলো জ্বর ও ব্যথা কমাতে প্যারাসিটামল আর ফ্লুইড ব্যালেন্স করে রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখা। ডেঙ্গু রোগীর খাদ্য ও পুষ্টির প্রতিও রাখতে হবে বিশেষ নজর। * যারা হাসপাতালে থাকবেন তাদের IV fluid এর পাশাপাশি মুখে তরল খাবার দিয়ে total fluid ব্যালান্স করতে হবে।

* অপর পক্ষে যারা বাসায় আছেন তাদের পানিসহ অন্যান্য তরল মিলে ৩ লিটার সারা দিনে total fluid অর্থাৎ মুখে খাওয়া নিশ্চিত করতে হবে। * তাছাড়া জ্বরে ক্যালোরি চাহিদা বেড়ে যায়। তাই ক্যালোরিযুক্ত খাবার বেশি করে খেতে হবে। এ সময় মুখে রুচিও থাকে না। তাই এমন খাবার দিতে হবে যা অল্প খেলেও চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে। যেমন- ভাতের পরিবর্তে খিচুড়ি, পায়েস, ফিরনি বা পুডিং দেওয়া যেতে পারে। ফলে একটা খাবার থেকেই সব উপাদান পাওয়া যাবে। * মুখে ফলের রস, ডাবের পানি, সুপ ইত্যাদি পর্যাপ্ত পরিমাণে দিতে হবে। * যদি জ্বরের সঙ্গে পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়া ও বমি হয়ে থাকে তবে শাক-সবজি, ডাল, দুধ ও দুধে তৈরি খাবার বাদ দিতে হবে। এ অবস্থায় ডাবের পানি, মুরগির সুপ, চালের সুপ বা ভাতের মাড়, আপেলের জুস খুব ভালো কাজ করে। * মূল খাবার হিসেবে ভাত বা জাউয়ের সঙ্গে কাঁচকলার ঝোল দিলে রোগী উপকৃত হবে। * মাছ বা মাংস বন্ধ না করে সহজপাচ্য মাছ যেমন- শিং, শোল, পাবদা ইত্যাদি লোফাইবার মাছ বা মুরগির তরকারি দেওয়া ভালো। * গায়ে কোনো Rash থাকলে সাধারণত এলার্জিক খাবার যেমন- গরুর মাংস, হাঁসের ডিম, চিংড়ি মাছ, ইলিশ মাছ ও বেগুন ইত্যাদি না খাওয়াই ভালো। * পেঁপে পাতার রস খাওয়া যেতে পারে। এতে এন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান পাওয়া যায় যা শরীর ব্যথা কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তবে বৈজ্ঞানিক চিকিৎসা না করিয়ে লতাপাতা দিয়ে চিকিৎসা ঝুঁঁকিপূর্ণ বা প্রাণঘাতী হতে পারে। তাই জ্বরসহ অন্য উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এ ছাড়া এ সময় অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার বা ভাজা-পোড়া খাবেন না। কারণ ডেঙ্গু রোগীদের ডায়রিয়া বা পেট খারাপের আশঙ্কা থাকে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ব্যক্তি স্যাচুরেটেড ফ্যাটযুক্ত খাবার, চিনিযুক্ত এবং বায়ুযুক্ত পানীয় এড়ানো উচিত, কাঁচা শাকসবজি একেবারেই খাবেন না।

লেখক : প্রধান পুষ্টিবিদ, অ্যাপোলো ইমপেরিয়াল হসপিটাল, চট্টগ্রাম।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button