চট্টগ্রামশীর্ষ নিউজ

ছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে শিক্ষকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:

চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ থানার মগধরা ইউনিয়নে একটি নূরানী মাদরাসার প্রথম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের মামলায় শিক্ষক আবু তাহের প্রকাশ শিপনকে (২৮) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক জয়নাল আবেদীন এই রায় দেন। কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শিপন হারামিয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড বক্তা সেরাং এর বাড়ির মৃত আবুল কালাম প্রকাশ ফখড়ের ছেলে।

ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট জিকো বড়ুয়া বলেন, প্রথম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মাদরাসার শিক্ষক আবু তাহের প্রকাশ শিপনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে সাজা পরোয়ানা মূলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলা পরিচালনায় সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট শিমুল বড়ুয়া, সুস্মিতা বড়ুয়া ও চৈতি বড়ুয়া।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০২১ সালের ৯ জুন সন্দ্বীপ উপজেলার মগধরা ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ড এর নূরানী মাদরাসার প্রথম শ্রেণির ছাত্রী (৭) পরীক্ষা দিতে যান। পরীক্ষা শেষে সকাল সাড়ে দশটার দিকে বড় ভাইয়ের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। সেদিন বড় ভাই গাড়ি নিয়ে দূরবর্তী এলাকায় যাওয়ায় মাদরাসায় যেতে পারেনি। মাদরাসার বারান্দায় ভাইয়ের জন্য অপেক্ষায় থাকা অবস্থায় মাদরাসা শিক্ষক তাহের ছাত্রীকে অফিস রুমে ডাকেন।

ছাত্রী যেতে না চাইলে বেত দিয়ে পিটিয়ে তাকে অফিস রুমে নিয়ে যায়। মাদরাসার শিক্ষার্থীরা সকাল এগারোটার দিকে চলে গেলে অফিস রুমের ফ্লোরে ছাত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন শিক্ষক তাহের। ধর্ষণের কথা কাউকে বললে পুনরায় পেটানো হবে বলে ভয়ভীতি দেখানো হয়। শিক্ষক পুকুরে গেলে ওই ছাত্রী পালিয়ে বাড়িতে চলে আসে। পরে অসুস্থ অবস্থায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় ১৩ জুন সন্দ্বীপ থানায় ছাত্রীর পিতা বাদী হয়ে মামলা করেন। তদন্ত শেষে ৩১ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।  ২০২২ সালের ২০ এপ্রিল আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। ৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রায় ঘোষণা করেন বিচারক।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button