বিনোদনসংগঠন সংবাদ

শারদীয় দুর্গোৎসবে ষষ্ঠীপূজার পর মহাসপ্তমী সম্পন্ন

মহাষষ্ঠীর মধ্যে দিয়ে শুক্রবার শুরু হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয়  উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। শনিবার  অনুষ্ঠিত হয় দেবীদুর্গার মহাসপ্তমী পূজা।

যশোরের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা প্রথম ও দ্বিতীয় দিন শুক্র এবং শনিবার বিভিন্ন মণ্ডপ পরিদর্শন করেন।

ষষ্ঠীতে মন্দির ও মণ্ডপে মণ্ডপে স্থাপন করা হয় বোধনের ঘট। ভক্তের ভক্তি, নিষ্ঠা আর পূজার আনুষ্ঠানিকতায় মাতৃরূপে দেবী দুর্গা অধিষ্ঠিত হন মণ্ডপে মণ্ডপে। দেবী দুর্গার আগমনে উচ্ছ্বসিত ভক্তকুল। সকাল ৬টা ১০ মিনিটে পূজা আরম্ভ হয়। সায়ংকালে দেবীদুর্গার বোধন,  আমন্ত্রণ ও অধিবাসও হয়। বিশুদ্ধ পঞ্জিকা মতে বিকেল ৫ টায় হয় পূজা আরম্ভ। সকালে দেবী বোধনের পর মন্দির ও মণ্ডপে মণ্ডপে ভক্তবৃন্দের উপস্থিতিতে পুরোহিত দেবীদুর্গার পূজা করেন। এ সময় প্রতিটা পূজা মন্দির ও মণ্ডপে বাজানো হয় হিন্দু ধর্মীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত। পূজার সময় ভক্তবৃন্দের শঙ্খ আর উলু ধ্বনিতে মুখরিত হয় মণ্ডপগুলো। পূজা শেষে ভক্তবৃন্দকে অঞ্জলি প্রদান করা হয়। অঞ্জলি শেষে ভক্তবৃন্দ দুর্গতিনাশিনী দেবীদুর্গার চরণে পুষ্প দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের মনোবাসনা কায়েমের জন্য আরাধনা করেন।

যশোর শহর এবং শহরতলির লালদিঘী পুকুরপাড় হরিসভা পূজা মন্দির, বাগমারা সড়ক সার্বজনীন পূজামণ্ডপ, ষষ্ঠীতলাপাড়া সার্বজনীন পূজামণ্ডপ, সন্যাসী দিঘীরপাড় সার্বজনীন পূজামণ্ডপ, শহিদ সুধীর বাবু কাঠগোলা পূজা মন্দির, সিদ্বেশ্বরী কালী মন্দির পূজা মণ্ডপ, নীলগঞ্জ সুপারী বাগান সার্বজনীন পূজামণ্ডপসহ অনেক স্থানে অনুষ্ঠিত হয় শারদীয় দুর্গোৎসব। সন্ধ্যায় মন্দির ও মণ্ডপে মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হয় সন্ধ্যারতি। দেবীদুর্গার মহাষষ্ঠী পূজায় যশোর শহরের মণ্ডপগুলোতে সন্ধ্যার পর ভক্তবৃন্দ ও দর্শনার্থীর উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়।

সব মিলিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের মাঝে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। এ দিকে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপন নির্বিঘ্ন করতে প্রতিটি মন্দির ও মণ্ডপে মণ্ডপে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় রয়েছে পুলিশের পাশাপাশি আনসার-ভিডিপি সদস্য। এছাড়াও প্রতিটি পূজামণ্ডপে রয়েছে তাদের স্বেচ্ছাসেবক। এ বাদেও রয়েছে পুলিশের ভ্রাম্যমাণ টিম। দুর্গা পূজার সার্বিক বিষয়ে অবগত হওয়ার জন্য পূজা উদযাপন পরিষদ যশোর জেলা শাখা লালদিঘী পুকুরপাড়স্থ হরিসভা মন্দিরে কন্ট্রোল রুম খুলেছে।

শুক্রবার সদর আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, পুলিশ সুপার প্রলয় জোয়ারদার বিভিন্ন মণ্ডপ পরিদর্শন ও পুজারিদের সাথে কুশল বিনিময় করেছেন। জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দিপংকর দাস রতন জানান, সকল ধর্ম বর্নের মানুষের উপস্থিতিতে মন্ডপে মন্ডপে চলতে পূজা অর্চনা। তিনি জানান নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে তাই নারী পুরুষের উপস্থিতি এবং আনন্দ উচ্ছাস অনেক বেশি।

বিকেল গড়ানোর সাথে সাথে সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ দলীয় নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে রুপদিয়া সার্বজনীন কালী মন্দির, মুড়লী জোড়া মন্দির, শহরের সুধীর বাবুর কাঠগোলা মণ্ডপ, বানী জুয়েলার্স মন্ডপ, বেজপাড়া পূজা মন্দির ও রামকৃঞ্চ আশ্রম পরিদর্শন করেন । জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মেহেদী হাসান মিন্টু, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুলসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ তার সাথে ছিলেন।

সন্ধ্যার পরে পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার স্বস্ত্রীক শহরের বেজপাড়া পূজা মন্দির, মুড়লী জোড়া মন্দির ও মাড়োয়ারি মন্দির পরিদর্শন করেন। জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দিপংকর দাস রতন, সাধারণ সম্পাদক তপন ঘোষসহ পরিষদের নেতৃবৃন্দ তার সাথে ছিলেন।

সকালের পূজা উপলক্ষে সদর উপজেলার আরবপুর ইউনিয়নের পাকদিয়া মন্দির প্রাঙ্গণে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে  বিতরণ করা হয় অন্ন-বস্ত্র। পুলিশ সুপার প্রলয় জোয়ারদার এতে প্রধান অতিথি ছিলেন। ইউপি চেয়ারম্যান শাহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে পূজা  উদযাপন পরিষদের সভাপতি দিপংকর দাস রতন ও সাধারণ সম্পাদক তপন ঘোষ বিশেষ অতিথি ছিলেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button