চট্টগ্রামশীর্ষ নিউজ

পিয়ন থেকে কোটিপতি হওয়া  সিবিএ নেতা নাছির কারাগারে

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদকের) করা মামলায় পদ্মা অয়েল সিবিএ নেতা নাছির উদ্দিনকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। তিনি পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ বেগম জেবুনেচ্ছার আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে নাছির আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেছেন।
গেল বছরের ২ নভেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি দায়ের করা হয়। কার্যালয়টির উপ-সহকারী পরিচালক মো. সবুজ হোসেন বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় ২ কোটি ৫৬ লাখ ২৮ হাজার ৮৬ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং ২ কোটি ১১ লাখ ৭১ হাজার ১৩০ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করার অভিযোগ আনা হয়।
এদিকে মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে জানা যায়, নাছির উদ্দিন প্রথমে অস্থায়ী সিকিউরিটি গার্ড পদে পদ্মা অয়েল কোম্পানিতে যোগদান করলেও পরে ১৯৮৬ সালের ২৩ আগস্ট ২৩০ টাকা বেসিক বেতনে পিয়ন হিসেবে চাকরি নিয়মিত হয় তার। ২০১৪ সালের ট্যাংক লরী হেলপার থেকে চেকার হয়, এর ছয় মাসের মাথায় সুপারভাইজার পদোন্নতি পান।
নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় ২০১৯ সালে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেয় দুদক। পরবর্তীতে একই বছরের ১২ মে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। দুদকের কাছে তিনি ২৭ লাখ ২৬ হাজার ৯০০ টাকার স্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য প্রদান করেন। এরমধ্যে আনোয়ারার চাকরিতে ১ লাখ ৬৮ হাজার ১৫০ টাকায় ৫২ শতক কৃষি জমি ও আলোচ্য জমিতে ২৫ লাখ ৫৮ হাজার ৭৫০ টাকা ব্যয়ে একটি কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ করার কথা উল্লেখ করেন।
অথচ দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রকৌশলী দ্বারা পরিমাপে কমিউনিটি সেন্টারটি নির্মাণ ব্যয় পাওয়া যায় ১ কোটি ৪২ লাখ ৮৭ হাজার ১৩৪৪ টাকা। এখানে তিনি ১ কোটি ১৭ লাখ ২৮ হাজার ৩৮৪ টাকা গোপন করেন। এছাড়া সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের রেকর্ডপত্র যাচাইকালে তার নিজ নামে ২৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকার সম্পদ ক্রয়ের তথ্য পাওয়া যায়। সবমিলিয়ে তিনি ১ কোটি ৪৩ লাখ ৯৬ হাজার ৩৮৪ টাকা স্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করেছেন।
এর বাইরে তিনি তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ১ কোটি ২ লাখ ৯৪ হাজার ৪৭৪ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দেন। কিন্তু যাচাইকালে তার নামে মোট ১ কোটি ৭০ লাখ ৬৯ হাজার ২২০ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়।
এরমধ্যে তিনি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, পলিসি স্কিম, মেসার্স আমিন নামে প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ ও জমা রাখেন। এখানে তিনি ৬৭ লাখ ৭৪ হাজার ৭৪৬ টাকা অস্থাবর সম্পদ গোপন করেন। সবমিলিয়ে তিনি ২ কোটি ১১ লাখ ৭১ হাজার ১৩০ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করেন।
মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা দীপেন দাশগুপ্ত জানান, নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে ২ কোটি ১১ লাখ ৭১ হাজার ১৩০ টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ করেছিল দুদক। তিনি আজ (মঙ্গলবার) আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button