সতীঘাটা কামালপুরে রানা বাহিনীর অত্যাচারে দিশেহারা মানুষ
মালিক উজ জামান, যশোর : যশোর সদর উপজেলার সতীঘাটা কামালপুরে রানা বাহিনীর অত্যাচার মারাত্মক আকার ধারন করেছে। প্রতিনিয়ত তাদের অত্যাচারে এলাকাবাসী দিশেহারা হয়ে পড়েছে। রানা বাহিনীর নারী লিপ্সুতায় এলাকার মেয়েরা অরক্ষিত বলে স্থানীয়রা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। ভূক্তভোগ দের একজন জনৈকা পলি কোতয়ালি মডেল থানায় অভিযোগ করেছেন।
জানা গেছে, কামালপুর দক্ষিনপাড়ার মজিদ গাজীর পুত্র রানা গাজী (৩০) এখন নিজেই একটি বাহিনী গড়ে তার নেতৃত্ব দিচ্ছে। চাঁদাবাজি, মানুষজনকে হুমকী ধামকী ছাড়া তাদের রাতের আধারে প্রধান টার্গেট এলাকার নারী। তাদের টার্গেটে ১৫ থেকে ৩০ বছরের সকল নারী। রবিবার এই বাহিনীর টার্গেটে পড়ে পলি নামের এক নারী। স্থানীয়রা জানায়, একই পাড়ার পলি (২৫) জসিম উদ্দীনের কন্যা। তাকে রানা দীর্ঘদিন ধরে টার্গেট করে কয়েকবার তাকে ধর্ষন করার চেষ্টা করে। তা না পেরে সে টার্গেটে থাকে। এদিন ভোরে ফজরের নামাজের সময় ওজু করতে ওঠে। এসময় বাহিনী প্রধান রানা অন্ধকারে হঠাৎ পলিকে জোর করে ধরে নিয়ে বাগানে নিয়ে যায়। পলির চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। চিল্লাপাল্লা শুনে রানার বাড়ির লোকজন ও তার বাহিনীর সদস্যরাও ঘটনাস্থলে হাজির হয়। স্থানীয়রা ছেড়ে ফাটাকাপড়সহ প্রায় বিবস্ত্র পলিকে রানার কবল থেকে উদ্ধার করে। হঠাৎ বাহিনী প্রধান রানার স্ত্রী লিপি, মা সালেহা বাহিনীর সন্ত্রাসীদের সহায়তায় রানাকে ছিনাইয়া নিয়ে যায়। সেসময় রানা, রানার লিপি, মা সালেহাসহ বাহিনীর সদস্যরা পলি ও পলির মা নিলুফা বেগম (৪৫) কেও লাঠিসোটা দিয়ে ২য় দফায় মারধোর করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযোগ করেন। প্রানভয়ে এসময় আগতরা নিশ্চুপ ছিল। কেননা আসামিদের কাছে ধারালো গাছি দা, রামদা, হাসুয়া ছাড়াও আগ্নেয়াস্ত্র ছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামবাসী জানায়, বাহিনী প্রধান রানাসহ বাহিনীর সদস্যরা এলাকায় একের পর এক অপকর্ম করলেও তাদের অপকর্মে কেউ বাঁধা দিতে পারছেনা। বরং তার বাড়ির লোকজনের কাছে অভিযোগ করে অভিযোগকারীকে অযথা হয়রানি করা হয়। শুধু নারী অত্যাচারই নয় এলাকায় হাস মুরগী চুরি, চাঁদাবাজির অভিযোগে অভিযুক্ত রানা ও তার অনুসারিরা। তবে প্রানভয়ে কেউ বাঁধা দিতে পারেনা। এর আগে রানা বাহিনীর হাতে বেজায় নাজেহাল হয়েছিলেন বাক্কা গাজী। বাক্কা গাজীর পুত্র বাবুকেও হত্যার চেষ্টা করে রানা বাহিনী। পরে বাক্কা গাজী থানা আদালতের দ্বারস্থ হয়ে সেযাত্রা পার পান। শনিবার গাজী কাশেমের পুত্র নয়ন ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার চেষ্টা করে। তবে এলাকার লোকজন এগিয়ে আসলে তাদের অপকির্তী মাঠে মারা পড়ে।
স্থানীয়রা জানায় রানা আগেও চুরি ডাকাতি করে বেড়াত। প্রশাসনের চাপে সে বিদেশে পালিয়ে যায়। কিছু দিন প্রবাস জীবন কাটিয়ে দেশে ফিরেই সে আবারো আগের পেশায় ফিরে গেছে। এলাকায় ফিরেই সে বাহিনী তৈরি করে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও মাদক দ্রব্য বেচাকেনা করে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে কেউই প্রানভয়ে মুখ খোলেনা। একারনে প্রশাসন রানা বাহিনী সম্পর্কে বেশি কিছু জানতে পারেনা। তবে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে তাদের অভিযোগের পাহাড় জমা রয়েছে।
স্থানীয় ১১নং রামনগর ইউপির চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান লাইফ এক্ষেত্রে ভূক্তভোগী পলি ও তার পরিবারকে সহায়তা করবেন বলে জানা গেছ্ েকেননা রানা বাহিনীর অত্যাচার তার কানে একের পর এক আসতে আসতে কান ঝালাপালা হয়ে গেছে।