এনডিআই, আইআরআই বাংলাদেশের দলগুলোর মধ্যে সংলাপের প্রস্তাব
১৫ অক্টোবর, ২০২৩ (বাসস) : বাংলাদেশে একটি গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার মতপার্থক্য নিরসনে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান দলের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত প্রাক-নির্বাচন মূল্যায়ন প্রতিনিধিদল।
দেশে ফেরার পর শনিবার দেয়া এক বিবৃতিতে, প্রতিনিধি দলটি প্রস্তাবিত সংলাপকে তাদের পাঁচ দফা সুপারিশের এক নম্বর পূর্ব-শর্ত হিসাবে প্রস্তাব করে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল এবং নির্বাচন কমিশনসহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সাথে কথা বলার পর তারা তাদের সুপারিশের খসড়া তৈরি করে।
ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) এবং ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই)’র যৌথ প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচনী প্রস্তুতির একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ মূল্যায়নের লক্ষে ৮ থেকে ১১ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশ সফর করে।
প্রতিনিধিদলের সুপারিশমালার মধ্যে রয়েছে- সৌহার্দ্যপূর্ণ বক্তৃতা-বিবৃতি এবং মুখ্য নির্বাচনী ইস্যুতে উন্মুক্ত ও মূল সংলাপে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা এবং একটি উন্মুক্ত নাগরিক স্পেস নিশ্চিত করা, অহিংসার প্রতি অঙ্গীকার, রাজনৈতিক সহিংসতার অপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় আনা, সমস্ত পক্ষের অর্থপূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় সম্পৃক্ত হতে পারার পরিস্থিতি তৈরি করা এবং নাগরিকদের মধ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সক্রিয় নির্বাচনী অংশগ্রহণের সংস্কৃতি উৎসাহিত করা।
মার্কিন প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফরকালে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তা, নির্বাচন কমিশন (ইসি), বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠীর প্রতিনিধি, ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বিবৃতিতে, প্রতিনিধি দলটি পর্যবেক্ষণ করেছে যে বাংলাদেশের আদর্শিক বহুত্ববাদ, বলিষ্ঠ গণমাধ্যম, সক্রিয় নাগরিক সমাজ এবং রাজনৈতিকভাবে সম্পৃক্ত নাগরিক সমাজের সমর্থনপুষ্ট গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের একটি সুদৃঢ় ঐতিহ্য রয়েছে।
এতে বলা হয়, বিগত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশ শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দারিদ্র্য হ্রাস ও পরিবেশগত নেতৃত্বে সাফল্য দেখিয়েছে। এই অর্জনগুলো ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হওয়ার রূপকল্প অর্জনে একটি শক্তিশালী ভিত্তি রচনা করেছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্বাচনী প্রেক্ষাপট সম্পর্কে প্রতিনিধি দলটি পর্যবেক্ষণ করে যে নির্বাচনী সহিংসতা ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশে একটি সাধারণ সমস্যা।
বিবৃতিতে প্রতিনিধি দল বলেছে, ‘রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি আস্থা হ্রাস এই অগ্রগতির ওপর ছায়াপাত করে এবং অর্থনৈতিক ও উন্নয়নের গতিপথকে দুর্বল করার ঝুঁকিতে ফেলে দেয়।’
প্রতিনিধি দল স্বীকার করেছে যে বাংলাদেশের জনগণই চূড়ান্তভাবে তাদের নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা ও বৈধতা এবং তাদের দেশের গণতান্ত্রিক উন্নয়ন নির্ধারণ করবে।
‘প্রাক-নির্বাচন বিবৃতি বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে সহায়তা ও শক্তিশালী করার চেতনায় দেওয়া হয়েছে’ বলে প্রতিনিধি দলটি জানায়।