শীর্ষ নিউজ

মাকাপুরের হায়দার আলীর স্ত্রী পুত্র ২ কন্যা বাড়ী থেকে বিতাড়িত 

মাকাপুরের আলোচিত হায়দার আলীর স্ত্রী পুত্র কন্যা নিজ বাড়িতে উঠতে পারছেননা। হায়দার আলীর বোন ভাগ্নেদের জবরদখলে এরা এখন এলাকা ছাড়া। এরা নিজেরা দ্বন্দ্বে মামলা মোকদ্দমায় অন্য স্বজনদের আসামী করায় মাকাপুর জুড়ে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে।

২০২৩ সালের ৯ অক্টোবর হায়দার আলী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে সেসময় ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহের দাফন সম্পন্ন হয়। কিন্তু ২৭ ডিসেম্বর হায়দার আলীর বোন হামিদা বেগম হায়দার আলীকে হত্যার অভিযোগে তার তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী এবং ছেলে-মেয়েসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে যশোর আদালতে মামলা করেন।

জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. ইমরান আহম্মেদ অভিযোগের তদন্ত করে সিআইডিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আদেশ দেন। এ মামলার প্রেক্ষিতে আদালত ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে মরদেহ উত্তোলনের আদেশ দেন।

 ২৩ জানুয়ারি দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাহাত খান ও চৌগাছা থানার এসআই মাহফুরুর রহমানের উপস্থিতিতে উপজেলার মাকাপুর পারিবারিক কবরস্থান থেকে তার মরদেহ উত্তোলন করা হয়।

স্থানীয়রা জানায়, হায়দার আলী মারা যাওয়ার পর স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় মৃতের স্ত্রী পুত্র কন্যা তার সম্পত্তি প্রাপ্তির কথা। কিন্ত এক্ষেত্রে তা হয়নি।

হায়দার আলীর বোন হামিদা বাদি হয়ে বাড়িটি নিজ জবর দখলে রেখেছে। আর তার সাথে রয়েছে হায়দার আলীর ছোট বোন শাহিদা ভাগ্নে হাসিবুল (পিং-মৃত মইনুদ্দিন, গ্রাম-হুদাপাড়া) ও চাচাত ভাই শহিদুল ইসলাম (পিতা-মৃত মগরেব আলী)।

এই জবর দখলকারীদের পিছনে রয়েছে চৌগাছার একজন আওয়ামীলীগ রাজনৈতিক নেতা। তবে গ্রামবাসী তার নাম বলতে পারেননি।

সরেজমিনে জানা যায়, হায়দার আলী যখন অসুস্থ হয়ে বাড়িতে ছিল, তখন বড় বোন হামিদা, ছোটবোন শাহিদা, ভাগ্নে হাসিবুল ও চাচাত ভাই শহিদুল ইসলাম তাকে যশোর শহরের কুইন্স হসপিটালে ভর্তি করেন। এরপর তারাই আবার অবস্থার অবনতি হলে গুরুতর অসুস্থ হায়দার আলীকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

মাকাপুরের গ্রামবাসী জানান, দুই জবরদখলকারী হামিদা গং ও হায়দার আলীর স্ত্রী লতিফা হায়দার গং অন্তত; নয়টি মামলা একে অপরের বিরুদ্ধে করেছেন। কিন্ত এরা এমন কিছু মানুষকে এ মামলায় আসামী করেছেন তা নিয়ে মামলার ভবিষ্যত সন্দিহান। বিশেষত: হায়দার আলীর ছেলে ব্যারিস্টার একে মোর্তজা রাসেল তখন ছিল সুদুর ইউরোপ মহাদেশের ইংল্যান্ডে। এছাড়ার চৌগাছা থানা কৃষকলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল ও বাবুলের ছেলে বিশাল কে আসামি করা হয়েছে। এরাও হায়দারের হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসা সম্পর্কে কিছুই জানেনা। কেননা তারা নিজগ্রাম মাকাপুরে থাকেননা। তারা দীর্ঘ দিন চৌগাছা পৌর এলাকায় বসবাস করেন। এ কারনে কথা বলার জন্য তাকে বা তার ছেলে বিশাল কে মাকাপুর গ্রামে এদিন পাওয়া যায়নি।

গ্রামবাসী জানায়, হায়দার আলীর বাস্তভিটার জমি, দ্বিতল বাড়ী যার আয়তন অন্তত: ১০বিঘা জমি এবং মাঠের অন্তত: শত বিঘা জমি কব্জা করতে হামিদা বানু গং পরিকল্পিতভাবে ও ষড়যন্ত্রমূলক হায়দার আলীর স্ত্রী লতিফা হায়দার গঙের বিরুদ্ধে এসব মামলা করেছেন। বাস্তবে তাদের উদ্দেশ্য ভিন্ন।

আর লতিফা হায়দার যেসব মামলা করেছেন তার আসামি তালিকায় এমন কিছু মানুষের নাম রয়েছে যারা বাড়ি দখল, জমি দখল বা হায়দার আলীকে হাসপাতালে ভর্তির সাথে সম্পৃক্ত নন। এসব বিষয় নিয়ে গ্রামবাসী চরম অসন্তষ্ট। তারা সরাসরি এসব প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

নাম না প্রকাশের শর্তে এদের মধ্যে কয়েকজন বলেছেন, হুদাপাড়ার বিএনপি হাসিবুল কিভাবে মাকাপুরে এসে এসব অপকর্ম করতে পারে তা কারো বোধগম্য নয়। এসময় গ্রামবাসী জানান, হাসিবুল চৌগাছার বিএনপি নেতা জহুরুল ইসলামের অনুসারী।

গ্রামবাসী জানান, হায়দার আলীর স্ত্রী লতিফা হায়দার, ছোট ছেলে আল ইমরান, দুই কন্যা স্নেহলতা পারভীন বিউটি ও তামান্না নাজনীন লাভলী বর্তমানে বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়ে বর্তমানে উপশহরের একটি বাড়িতে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তবে তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button