বিপিএল: সিলেটে থামলো কুমিল্লা
চট্টগ্রাম, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ (বাসস) : সিলেট স্ট্রাইকার্সের ইংল্যান্ড অলরাউন্ডার বেনি হাওয়েলের ঝড়ো হাফ-সেঞ্চুরি ও পেসার তানজিম হাসান সাকিবের বোলিং নৈপুন্যে টানা পাঁচ ম্যাচ জয়ের পর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পরাজিত হলো বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। আজ নিজেদের দশম ম্যাচে সিলেটের কাছে ১২ রানে হেরেছে কুমিল্লা। এই হারের পরও ১০ ম্যাচে ৭ জয় ও ৩ হারে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয়স্থানে থেকে প্লে-অফে দৌড়ে থাকলো কুমিল্লা। ১১ ম্যাচে ৪ জয় ও ৭ হারে ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ষষ্ঠস্থানে আছে আগেই প্লে-অফে খেলার আশা শেষ হয়ে যাওয়া সিলেট।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে কুমিল্লার বিপক্ষে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৩১ বলে ৪০ রানের সূচনা এনে দেন সিলেটের দুই ওপেনার ওয়েস্ট ইন্ডিজের কেনার লুইস ও জাকির হাসান। ষষ্ঠ ওভারে প্রথমবারের মত আক্রমনে এসে ৩টি চারে ১৮ রান করা জাকিরকে শিকার করে সিলেটের উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গেন কুমিল্লার হয়ে এবারের আসরে প্রথম খেলতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্পিনার সুনীল নারাইন।
দ্বিতীয় উইকেটে নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টায় ২৭ বলে ২৭ রান তুলেন লুইস। পেসার মুশফিক হাসানের বলে সাজঘরে ফেরার আগে ২টি করে চার-ছক্কায় ২৫ বলে ৩২ রান করেন লুইস।
এরপর সিলেট শিবিরে ১১তম ওভারে জোড়া আঘাত হানেন লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। শান্তকে ১২ ও ইয়াসির আলিকে ২ রানে আউট করেন তিনি।
৭৪ রানে চতুর্থ উইকেট পতনের পর সিলেটকে লড়াইয়ে ফেরান অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন ও হাওয়েল। রিশাদের করা ১৭তম ওভারে ২৪ রান নেন তারা। জুটিতে ৪২ বলে ৭৭ রান যোগ করে বিচ্ছিন্ন হন মিঠুন ও হাওয়েল। ২টি ছক্কা ও ১টি চারে ২০ বলে ২৮ রান করে নারাইনের দ্বিতীয় শিকার হন মিঠুন।
২৪ বলে এবারের আসরের দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি করেন হাওয়েল। তার ঝড়ো ইনিংসের সুবাদে ৫ উইকেটে ১৭৭ রানের সংগ্রহ পায় সিলেট। শেষ ৫ ওভারে ৬৯ রান করে তারা। ৬টি চার ও ৪টি ছক্কায় ২শ স্ট্রাইক রেটে ৩১ বলে অপরাজিত ৬২ রান করেন হাওয়েল। ৭ রানে অপরাজিত থাকেন আরিফুল হক। কুমিল্লার নারাইন-রিশাদ ২টি করে উইকেট নেন।
১৭৮ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে দ্বিতীয় ওভারে ইংল্যান্ড স্পিনার সামিত প্যাটেলের শিকার হন ৩ রান করা কুমিল্লার ওপেনার ইমরুল কায়েস।
তিন নম্বরে নেমে ১টি করে চার-ছক্কায় ১৭ রান করে সিলেটের পেসার তানজিমের বলে আউট হন ইনফর্ম তাওহিদ হৃদয়।
তৃতীয় উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জনসন চালর্সকে নিয়ে ৫৬ বলে ৭৯ রান যোগ করে কুমিল্লাকে লড়াইয়ে রাখেন ৩৬ বলে এবারের আসরে দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি পাওয়া অধিনায়ক লিটন দাস।
২১ বলে ১২ রান করা চালর্সকে পেসার শফিকুল ইসলাম ও ইংল্যান্ডের মঈন আলিকে শূণ্যতে হাওয়েল আউট করলে চাপে পড়ে কুমিল্লা। এমন অবস্থায় ৬ উইকেট হাতে নিয়ে শেষ ২০ বলে ৫১ রান দরকার পড়ে কুমিল্লার।
১৮ ও ১৯তম ওভারে ১২ রান করে নেন লিটন ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের আন্দ্রে রাসেল। এতে শেষ ওভারে জয়ের জন্য ২৫ রান প্রয়োজন পড়ে কুমিল্লার।
শেষ ওভারের প্রথম বলে লিটনকে বোল্ড করেন তানজিম। ৭টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৫৮ বলে ৮৫ রান করেন একবার জীবন পাওয়া লিটন।
অধিনায়ক ফেরার পর শেষ ৫ বলে ১২ রানের বেশি পায়নি কুমিল্লা। এতে ৬ উইবেটে ১৬৫ রান করে হার নিয়ে মাঠ ছাড়েগ কুমিল্লা। ১৪ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৩ রান করে তানজিমের তৃতীয় শিকার হন রাসেল। ৩৩ রানে ৩ উইকেট নেন সিলেটের তানজিম।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
সিলেট স্ট্রাইকার্স : ১৭৭/৫, ২০ ওভার (হাওয়েল ৬২*, লুইস ৩৩, নারাইন ২/১৬)।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স : ১৬৫/৬, ২০ ওভার (লিটন ৮৫, রাসেল ২৩, তানজিম ৩/৩৩)।
ফল : সিলেট স্ট্রাইকার্স ১২ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : বেনি হাওয়েল (সিলেট স্ট্রাইকার্স)।