বিশেষ খবর

মেহেরপুরে গাছে গাছে আমের মুকুল

 

মেহেরপুর, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ (বাসস): মুজিবনগর আম্রকাননসহ জেলার আম বাগানগুলোর আধিকাংশ গাছে মুকুল ফুঠতে শুরু করেছে। ফাল্গুনি বাতাসে মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে ভরে উঠেছে আম বাগানগুলো। মধু মাসের আগমনী জানান দিচ্ছে আমের মুকুল। মধু সংগ্রহে মৌ মাছিরা ছোটাছুটি করছে। একইসঙ্গে  বেড়েছে আম চাষিদের ব্যস্ততা। বাগানের মালিকেরা আমগাছে ওষুধ ছিটানোসহ বিভিন্ন ধরণের যত্ন-আত্মি বাড়িয়েছে মুকুল ধরে রাখতে। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন-শীতের তীব্রতার কারণে এবছর একটু দেরিতে মুুকুল ফুটছে। শীতের তীব্রতা কমে যাওয়ার সাথে সাথে গাছে গাছে মুকুল ফুটতে শুরু করেছে। এবছর ফাল্গুন মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রতিটি গাছেই পুরোপুরিভাবে মুকুল ফুটে যাবে।
কৃষি বিভাগ জানায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী দু’জেলায় আম উৎপাদন হয় বেশি। কিন্তু স্বাদের দিক থেকে মেহেরপুরের আম জগত জুড়ে। মেহেরপুরের আম সুস্বাদু হওয়ায় এ জেলার আমের চাহিদা দেশের সব জেলা ছাড়িয়ে ইউরোপ মহাদেশেও তার মাহাত্ম ছড়িয়েছে। চাহিদা বৃদ্ধির সাথে সাথে আমের বাগানও বৃদ্ধি পাচ্ছে। মেহেরপুরের মুজিবনগরে বৃটিশ শাসনামলের মুজিবনগর আ¤্রকাননে বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ গ্রহণ করে। মেহেরপুর জেলায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সব জাতের আমেরই চাষ হচ্ছে। লাভজনক হওয়ায় প্রতিবছর কৃষিজমিতে তৈরী করা হচ্ছে আমের বাগান। এখানকার মাটির গুণেই হিমসাগর, ল্যাংড়া, বোম্বাই, তিলি বোম্বাই ইত্যাদি জাতের আম খুবই সুস্বাদু। বিশেষ করে নিয়মিত জাত ল্যাংড়া, গোপালভোগ, ক্ষীরসাপাতি, আশ্বিনা জাতের বাগান বেশি থাকলেও গবেষণাকৃত বারি-৩, বারি-৪ জাতের বাগান তৈরির ক্ষেত্রেও আগ্রহী হয়ে উঠছে অনেকে। সেইসঙ্গে নতুন নতুন বাগানগুলো তৈরী হচ্ছে বনেদি ও হাইব্রিট জাতের। বারোমাস ধরে এমন বাগানও তৈরী করছে চাষীরা।
মেহেরপুরের সদর উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের আমচাষী আব্দুর রশিদ জানান, শীতের তীব্রতা কমে যাওয়ায় অধিকাংশ আমগাছে মুকুল আসতে শুরু করেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার গাছগুলোতে মুকুলের সমারোহ ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।
মেহেরপুর জেলা শহরের আমচাষী আজিবর রহমান  চুয়াডাঙ্গা সড়কে এবং সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের বুলবুল হোসেন বারোমাস জাতের আমচাষ করেছেন। অভিন্নসুরে উভয়ে জানান- অসময়ে আম ভালো চাহিদা থাকে।  ভালো দামও পাওয়া যায়। ভোক্তারা  বাগানে এসে গাছ থেকে পছন্দের আম কিনে নিয়ে যায়।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার বলেন, মূলত তিনটি পর্যায়ে আমের মুকুল আসে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত সব গাছে মুকুলে ভরে যাবে। জেলায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে আমবাগান রয়েছে। নিয়মিত যত্ন নিলে আমের অফ ইয়ার থাকে না। ফলে এখন প্রতিবছরই গাছে গাছে আম ধরছে। এছাড়া নতুন জাতের লেট ভ্যারাটি আমও চাষ হচ্ছে। লেট ভ্যরাটি আম জুলাই-আগস্টে পাকে। তাছাড়া বারোমাস ধরে এমন আমবাগানও তৈরী হচ্ছে। ফলে আগামীতে দেশে বারোমাসই আম পাওয়া যাবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button