কর্ণফুলী প্রতিনিধিঃ
সৃজনশীল আর ব্যতিক্রমী উদ্যোগে মানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন কর্ণফুলী উপজেলার ক্ষুদে কুরআনে হাফেজ মোহাম্মদ তাহসিন।
পবিত্র রমজান মাসে চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ব্রিজঘাট এলাকার নয়াহাট জামে মসজিদে জীবনের প্রথম পুরো খতমে তারাবীর নামাজ পড়িয়ে এক টাকাও হাদিয়া নেননি হাফেজ তাহসিন। এমনকি তারাবি শেষে মসজিদ পরিচালনা কমিটির হাতে ৩৬ হাজার টাকা হাতিয়া ফেরত দেন।
জানা যায়, প্রথম রমজান থেকে ১৬ রমজান পর্যন্ত তিনি ইমামতি করে তারাবির নামাজ পড়িয়েছেন। যা নিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন পুরো এলাকায়। বিষয়টি মসজিদ কমিটির সংশ্লিষ্ট সবাইকেও ভাবিয়ে তোলেছে।
হাফেজ মোহাম্মদ তাহসিন চট্টগ্রাম কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড মোহসিন আলী পাড়ার মোহাম্মদ আলীর ছেলে। তাহসিন আল হারামাইন ইন্টার ন্যাশনাল হিফজ মাদ্রাসার ছাত্র। বয়স মাত্র ১১ বছর।
মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদত মোবারক জানান, ‘আমরা ক্ষুদে হাফেজ তাহসিনকে হাদিয়া হিসেবে ৩৬ হাজার টাকা দিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি তা নেননি। মসজিদের তৃতীয় তলার ছাদ নির্মাণের কাজ চলছে বলে হাদিয়ার সব টাকা তিনি ওখানে দান করেছেন।’
হাফেজ তাহসিনের পিতা মোহাম্মদ আলী বলেন, জীবনের শ্রেষ্ঠ উপহার আমার ছেলে একজন হাফিজ হয়েছে। আপনারা সবাই আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন। কেননা, ছেলেকে হাফেজ বানালাম আল্লাহ’র সন্তুষ্টির জন্য। সে কখনো তারাবির নামাজের হাদিয়া নেবেন না। বিনা পয়সায় নামাজ পড়াবেন।’
চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের সমাজসেবক মুহাম্মদ সেলিম হক বলেন, ‘হাফেজ তাহসিন হাদিয়া না নিয়ে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। ছোট্ট ছেলেটি হাফেজ হয়ে জীবনের প্রথম খদমে তারাবির সমস্ত হাদিয়া আল্লাহর ঘরে দিয়ে দিলেন। আল্লাহ যেন তার এই খেদমতকে কবুল করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘একদম শেষে মসজিদ কমিটির সিদ্ধান্তে তাহসিনকে পুনরায় দশ হাজার টাকা উপহার দেওয়া হয়। তা নিতেও তিনি রাজি নন। মুরব্বিরা কিছু দিলে সেটা নিতে হয়। এই কথা বলে কোনমতে তাহসিনের হাতে হাদিয়াটুকু তুলে দেন মসজিদ কমিটি।