আগামী নির্বাচন অনেক কঠিন হবে : তারেক রহমান
চট্টগ্রাম, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আগামী নির্বাচন অনেক কঠিন হবে। যদি আমাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ মাঠে থাকত বা থাকতে পারত, সেক্ষেত্রে নির্বাচন যতটা কঠিন হতো, তার চেয়েও আগামী নির্বাচন আরও কঠিন হবে। এখানে অনেক ষড়যন্ত্র চলছে এবং অনেক অদৃশ্য শক্তি কাজ করছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আজ বুধবার নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘রাষ্ট্রকাঠমো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ বিষয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী অধিবেশনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তারেক রহমান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, কেউ যদি মনে করেন, আমাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আমরা যাদের ভাবতাম, তারা মাঠে নেই বা মাঠে দুর্বল, আল্লাহর ওয়াস্তে এ কথা মন থেকে সরিয়ে দিন।
তিনি বলেন,‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, আপনি যেহেতু এ দলের প্রতিনিধি, আপনার বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র চলছে, একটু ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করুন। আপনি ছাত্রদল, যুবদল, মহিলা দল কিংবা স্বেচ্ছাসেবক দল, যা-ই হোন না কেন, আল্লাহর ওয়াস্তে এটা একটু চিন্তা করুন যে, বহু ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্রকে যদি উপড়ে ফেলতে হয়, এ ষড়যন্ত্রকে যদি উপড়ে আসতে হয়, আমাদের ধৈর্যের পরিচয় দিতে হবে। আমাদের ধৈর্যশীল হতে হবে, আচরণ সেরকম হতে হবে।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি না নিশিরাতের নির্বাচনে, ব্যালট চুরির নির্বাচনে। আমরা বিশ্বাস করি জনগণের ম্যান্ডেটে। আমরা সেই নির্বাচনে বিশ্বাস করি, যেখানে মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে, স্বচ্ছভাবে, সুন্দরভাবে, নিরাপদে, নিরাপত্তার সঙ্গে ভোট দেবে। সেটা অর্জন করতে হলে আপনাদের অনেককিছুর পরিবর্তন করতে হবে। আপনাদের আচরণ, চলাফেরা, কথাবার্তা পরিবর্তন করতে হবে। বারে বারে আমি বলছি, আপনারা জনগণকে সঙ্গে রাখুন, জনগণের সঙ্গী হোন।’
তারেক রহমান বলেন,‘আমরা কেউ ক্ষমতায় যাব না, আপনারা কেউ কিন্তু ক্ষমতায় যাবেন না, আপনারা মানুষের সমর্থন পেলে দেশ পরিচালনার সুযোগ পাবেন। মানুষ আপনাদের ক্ষমতা দেবে না, মানুষ আপনাদের দেশ পরিচালনার সুযোগ দেবে। পার্থক্যটা বুঝতে হবে। ক্ষমতায় ছিল পলাতক স্বৈরাচার। ওরা জনসমর্থন নিয়ে দেশ পরিচালনার সুযোগ পায়নি। ক্ষমতা দখল করে ক্ষমতায় ছিল। আমরা দেশ পরিচালনার সুযোগ পেতে চাই জনগণের সমর্থন নিয়ে’।
তিনি বলেন, ‘দুর্নীতির মাধ্যমে ১৫ বছরে আমাদের দেশের ২৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশে অবৈধভাবে পাচার হয়ে গেছে। ১৫ দিনের মধ্যেই তা আবিষ্কার করতে পেরেছে। এর মানে ভেতরে আরো অনেক কিছু আছে। দেশের কয়েক বছরের বাজেটের টাকার সমান টাকা চলে গেছে। পাচার হওয়া টাকা দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। মানি লন্ডারিংয়ের টাকা আন্তর্জাতিক ফোরামের সঙ্গে একটা সামঞ্জস্যের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য একটা ব্যবস্থা করতে হবে। ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার লোকাল ফোরামের মাধ্যমে কথাবার্তা শুরু করেছে। আমরা দেখব, অবজারভ করব, তারা সেটা কতটুকু করতে পারেন। যদি পারেন তাহলে ভালো, আমরা সেটাকে স্বাগত জানাবো। আর কী পারেন সেটা দেখে জনগণ যদি আমাদের ভোট দিয়ে দেশ সেবার সুযোগ দেন; তাহলে বিভিন্ন ফোরামের মাধ্যমে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার বন্দোবস্ত করেই ছাড়ব।’
তারেক রহমান আরো বলেন, ‘অবশ্যই আমরা আন্তর্জাতিক ফোরামের সহযোগিতা নেব। তবে এর বাইরে আন্তর্জাতিকভাবে যে প্রাইভেট সংস্থাগুলো আছে; তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলব। আমাদের দেশের সম্পদ (পাচার হওয়া টাকা) দেশের মানুষের সম্পদ যে এনে দিতে পারবে; আমরা তার সঙ্গেই কথা বলব-বসব।’