ঢাকা, ৩১ অক্টোবর, ২০২৩ (বাসস) : জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে জামাত-জঙ্গি-বিএনপি সন্ত্রাসী চক্রকে দমন ও ক্ষমতার বাইরে রাখতে হবে।
তিনি আজ নগরীর শহীদ কর্নেল তাহের মিলনায়তনে দলের ৫১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটি আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে এ কথা বলেন। সভা পরিচালনা করেন জাসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নইমুল আহসান জুয়েল।
আলোচনা সভায় সম্মানিত অতিথি হিসাবে লিখিত বক্তব্য পাঠান আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু এমপি। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (মা-লে) এর সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) এর আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ চৌধুরী খাজা প্রমুখ।
হাসানুল হক ইন বলেন, ‘সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখতে যথাসময়ে নির্বাচন করতে হবে। রাজাকার-বিএনপি সন্ত্রাসী চক্রের সাথে জাতীয় ঐক্যের নামে কোন মিটমাট করা যাবে না। আগুন সন্ত্রাসীদের রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করেই সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, তাদের আসল উদ্দেশ্য নিরপেক্ষ নির্বাচন নয়, তাদের আসল উদ্দেশ্য আগুনসন্ত্রাস-সহিংসতা-নাশকতা-অন্তর্ঘাতের পথে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করে নির্বাচন বানচাল করা এবং অস্বাভাবিক-অসাংবিধানিক সরকার আনা।
বিএনপি-জামাত ও তাদের রাজনৈতিক সঙ্গীদের এ দূরাশা বাংলাদেশের জনগণ কখনই সফল হতে দিবে না উল্লেখ করে জাসদ সভাপতি বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোট-মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকারের নেতৃত্বে ৭১ এর চেতনায় ফেরৎ যাবার সময় জঙ্গি-জামাত-বিএনপি চক্র নির্বাচন বানচালের গভীর ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। জঙ্গি-জামাত-বিএনপি চক্র ৭১-৭৫-২১ আগস্ট ও তাহের হত্যার খুনীদের আবার রাজনীতির ময়দানে ফেরৎ আনার মহা চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে আমির হোসেন আমু বলেন, সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশি বিদেশি সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়ন ও শান্তির স্বপক্ষে গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা অব্যাহত রাখার আহবান জানান।
তিনি বলেন, গত কয়দিন ধরে রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে বিএনপি ও জামাত দেশে তান্ডব চালাচ্ছে। ২৮ অক্টোবর দেশে এই প্রথমবারের মতো প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করা হয়েছে। বিএনপির কর্মীরা পুলিশ ফাঁড়িতে অগ্নি সংযোগ করেছে, হাসপাতালে হামলা করেছে, পুলিশ কনস্টেবলকে পিটিয়ে হত্যা করেছে, নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করেছে অসংখ্য সাংবাদিক, হরতাল ও অবরোধের নামে বাস পুড়িয়ে মানুষ হত্যায় নেমেছে। তারা দেশকে অস্থিতিশীল করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাচ্ছে। ১৪ দল তা হতে দেবে না।
রাশেদ খান মেনন বলেন, বিএনপি-জামাতের ২৮ তারিখের তান্ডব বিদেশী রাষ্ট্রদূতদের দেখানো হলে তারা কোন কথা বলেনি। এই কথা না বলার মধ্যেই অনেক কথা রয়েছে। তারা এ দেশে অবাধ নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন সহজে করতে দিবে না।
শিরীন আখতার বলেন, বাংলাদেশ একটি যুদ্ধের মধ্যে আছে। এ যুদ্ধ থেকে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক-মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির প্রতীক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের চিরশত্রুদের রাজনীতি থেকে চিরতরে বিদায় দিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
দলীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি, কার্যকরী সভাপতি এড. রবিউল আলম, সহ-সভাপতি মীর হোসাইন আখতার, স্থায়ী কমিটির সদস্য মোশাররফ হোসেন, সহ-সভাপতি আফরোজা হক রীনা এমপি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাদের চৌধুরী প্রমূখ।