আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ কোনো ‘ভয়ে নেই’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, নির্বাচন আসছে বলে ভয় পাব! কেন ভয় পাব! আমি জনগণের জন্য কাজ করেছি, জনগণ যদি ভোট দেয় আছি, না দিলে নাই।
গতকাল গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপান, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য সফর করেন। সেই সফরের বিস্তারিত তুলে ধরতেই এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চুক্তি ও আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরেন। তবে প্রশ্নোত্তর পর্বে আগামী নির্বাচন, সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় এবং রাজনীতির নানা প্রসঙ্গে কথা বলেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, আমার যে টার্গেট, আজকে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট কান্ট্রির মর্যাদা পেয়েছে। আমি ইলেকশন করব এ কারণে, যেহেতু করোনার কারণে আমরা ২০২৪ সালে (উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন) করতে পারিনি। আমরা ২০২৬-এ করব। আমি সেটা করে দিয়ে যেতে চাই।
প্রসঙ্গ নির্বাচনকালীন সরকার : নির্বাচনকালীন সরকার কেমন হবে, পাশাপাশি বিএনপির আন্দোলন জোরদার করায় সরকার কোনো চাপ অনুভব করছে কি না- জানতে চাইলে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ওয়েস্টমিনস্টার টাইপ অব ডেমোক্র্যাসি অনুসরণ করে। তাই ব্রিটেনে যেভাবে নির্বাচন হয়, বাংলাদেশেও সেভাবেই করা হবে। তিনি বলেন, এর মধ্যে আমরা এটুকু উদারতা দেখাতে পারি, পার্লামেন্টে সংসদ সদস্য যারা আছে, তাদের মধ্যে কেউ যদি ইচ্ছাপ্রকাশ করে যে, নির্বাচনকালীন সময়ে তারা সরকারে আসতে চায়, আমরা রাজি আছি। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনের সময় বিএনপিকেও এই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তারা আসেনি। এখন যেহেতু তারা পার্লামেন্টেও নাই, তাদের নিয়ে চিন্তারও কারণ নাই।
জ্বালাও–পোড়াও করলে ছাড় নয় : শেখ হাসিনা আরও বলেন, তারা মাইক লাগিয়ে আন্দোলন করেই যাচ্ছে। সরকার হটাবে? আমরা তো তাদের কিছু বলছি না। আমরা যখন অপজিশনে ছিলাম আমাদের কি নামতে দিয়েছে? গ্রেনেড হামলা করেও হত্যার চেষ্টা করেছে। ২১ হাজার নেতা-কর্মী আমাদের হত্যা করেছে। আগুন দিয়ে পুড়িয়ে পুড়িয়ে মানুষ মারছে। নির্বাচন ঠেকাতে ৫০০ স্কুল পুড়িয়ে দিয়েছে। সাড়ে ৩ হাজার লোক আগুনে পোড়া, ৩ হাজার ৮০০ গাড়ি পুড়িয়েছে। ২৭টা রেল পুড়িয়েছে। নয়টা লঞ্চ পুড়িয়েছে। ৭০টা সরকারি অফিস পুড়িয়েছে। তারা তো জ্বালাও-পোড়াও ওইগুলিই করে গেছে। হ্যাঁ আমি বলে দিছি যে, আন্দোলন করুক কোনো আপত্তি নাই। কিন্তু জ্বালাও-পোড়াও যদি কিছু করতে যায়, কোনো মানুষকে যদি আবার ওই রকম পোড়ায় তাকে ছাড়ব না। তিনি আরও বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে তাদের ২০-দলীয় ঐক্যজোট। সিট পেল মাত্র ২৯টা, আর তারা এখন আবার বড় বড় কথা বলে। আর দালালি; কার কথায় এই আন্দোলন করছে? কোথা থেকে এই টাকা পাচ্ছে? বাংলাদেশের মানুষ কি এত অন্ধ হয়ে গেছে, চোখে দেখে না? হাজার হাজার কোটি টাকা তো লুট করে নিয়েই গেছে। আর কাদের মদদে করছে সেটা একটু খোঁজ নেন না? এত টাকা কোথায় পাচ্ছে? এই যে লোক নিয়ে আসে আর প্রতিদিন মাইক লাগিয়ে বক্তৃতা দিচ্ছে; এটা তো বিনা পয়সায় আর হচ্ছে না।
আওয়ামী লীগ গাজীপুরে রাস্তা বন্ধ করে মিটিং করল কেন সেটা নিয়ে কোনো এক পত্রিকা প্রশ্ন তোলার বিষয়ে বিএনপির রাস্তা বন্ধ করে সমাবেশ করার বিষয় তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের অর্থনৈতিক হার্ট অব সিটি, সেখানে বিএনপি যে তার অফিসের সামনে রাস্তা বন্ধ করে করে মিটিং করে; যে জ্ঞানী লোক কথা বলেন তার এই দৃশ্য চোখে পড়ে না? তিনি বলেন, তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, এটা তো নির্বাচনী প্রচার। নির্বাচনী প্রচার এ রকম করে হতে পারে। কিন্তু প্রতিদিন যারা রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলন করে সরকার উৎখাত করবে? যতটুকু পারে আন্দোলন করুক। আমার কোনো ব্যাপার না। আমি আমার জনগণের সঙ্গে আছি। জনগণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। জনগণের আস্থা-বিশ্বাসই আমার একমাত্র শক্তি। আমার তো হারাবার কিছু নেই। বাব-মা, ভাই সব হারিয়েছি। শেখ হাসিনা বলেন, আমি আমার দেশের জন্য কাজ করে যাই। যারা আমাদের দুর্বলতা খোঁজে আর অর্থের হিসাব নেয়, মানি লন্ডারিং করেছে তো খালেদা জিয়ার দুই ছেলে। ৪৪ কোটি টাকা তো উদ্ধার করে নিয়ে আসছি। এখনো বিএনপির বহু নেতার টাকা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ব্যাংকে জমা আছে। কারও কারও টাকা ফ্রিজ করা আছে। সরকারপ্রধান বলেন, আওয়ামী লীগ যত বেশি কাজ করে তার পিছে সব লেগে থাকে, এটাই তো নিয়ম। ওটা আমি কেয়ার করি না। আমি দেশের জন্য কাজ করি। মানুষ ভালো থাকুক সেটাই আমি চাই। মানুষের কল্যাণ করাই আমার একমাত্র কাজ। সেটা আমি করে যাচ্ছি। কারণ সেই প্রত্যয় নিয়ে আমি আসছি। আমাদের সাকসেস এখানে, আজকে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট কান্ট্রির মর্যাদা পেয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এখন এগিয়ে যাচ্ছে। অনেকের এটা পছন্দ হবে না। যারা আমাদের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে, যারা গণহত্যা সমর্থন করেছে, যারা জাতির পিতাকে হত্যা করেছে তাদের এগুলো পছন্দ হবে না। তারা আমাদের বিরুদ্ধে শত্রুতা করেই যাবে। আমি তো বোমাপ্রুফ হয়ে গেছি; বোমা পুঁতেও মারতে পারে নাই। গুলি সরাসরি করেছে, তাও আমি মরি নাই। গ্রেনেড হামলা করেছে তাও মরি নাই। যত চেষ্টা করুক, আল্লাহতায়ালা কাজ দেয়। ওই কাজটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আল্লাহই রক্ষা করেন। কাজেই আমার যেটা লক্ষ্য আমি তো অর্জন করে দিয়েছি। আর বাকিটুকু আছে, সেটাও করে দেব।
স্যাংশনের ভয়ে বসে থাকব কেন : শেখ হাসিনা বলেন, যারা নিষেধাজ্ঞা দেবে, সেসব দেশ থেকে কোনোরকম কেনাকাটা করবে না বাংলাদেশ। অর্থ মন্ত্রণালয়কে তিনি এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের কী কারণে স্যাংশন দিল। যাদের দিয়ে আমরা সন্ত্রাস দূর করলাম, জঙ্গি দূর করলাম, তাদের ওপরে। হোলি আর্টিজানে যারা হামলা করেছিল, তাদের দমন করে মানুষ জীবিত উদ্ধার করতে কিন্তু ২৪ ঘণ্টাও লাগেনি। এরপর আর কোনো ঘটনা কেউ ঘটাতে পারেনি। এর পরও স্যাংশনটা কীসের জন্য? তিনি বলেন, আমি এজন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি অর্থ মন্ত্রণালয় এবং পরিকল্পনামন্ত্রীকে বলে দিয়েছি, আমাদের কেনাকাটা- বিদেশ থেকে জিনিস কেনার ক্ষেত্রে একটা ক্লজ (শর্ত) থাকবে, যারা আমাদের ওপর স্যাংশন দেবে, তাদের কাছ থেকে কোনো জিনিস আমরা কিনব না। তাতে ভয়ের কী আছে? আমরা তো কারও ওপর নিভর্রশীল না। আমাদের যা দরকার, আমরা নিজেরাই তো উৎপাদন করতে পারি।
শেখ হাসিনা বলেন, কথা নাই বার্তা নাই, স্যাংশনের ভয় দেখাবে, আর আমরা ভয়ে মুখ বুজে থাকব কেন? আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি, যারা আমাদের সপ্তম নৌবহরের ভয় দেখিয়েছিল, সেটাও পার করে বিজয় অর্জন করেছি, এই কথা ভুললে চলবে না। দরকার হলে এক বেলা খেয়ে থাকব, তাতেও অসুবিধা নেই।
রিজার্ভ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই : প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডলার সংকট এখন পুরো বিশ্বব্যাপী, এটা শুধু বাংলাদেশে না। কারণ প্রথম গেল করোনা অতিমারি, তারপর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। আর সেই যুদ্ধের সঙ্গে স্যাংশন, কাউন্টার স্যাংশন। যার ফলে আজকে বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, করোনা অতিমারির মধ্যে যেটা হয়েছিল যে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ, বিদেশে যাতায়াত বন্ধ, সবকিছু বন্ধ থাকাতে খরচও আমাদের কম ছিল, ভ্যাকসিন কিনতেই যা ডলার লেগেছিল, বাকি আমরা খুল ভালোভাবে একটা রিজার্ভ রাখতে পেরেছিলাম। কিন্তু এরপর যখন আবার অর্থনীতি উন্মুক্ত হলো, খুব স্বাভাবিকভাবেই সেই সুযোগটা থাকেনি, ডলার খরচ হচ্ছে এবং হবে। তার থেকেও বড় কথা, মানুষকে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিচ্ছি, গ্যাস দিয়ে নানা রকম ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে, বিনিয়োগ হচ্ছে, উৎপাদন বাড়ছে। কাজেই ডলারের ওপর চাপ পড়বে। তিনি বলেন, ডলার আর রিজার্ভ নিয়ে বেশি বেশি কথা বলতে বলতেই সবার মাথায় ওই রিজার্ভই ঢুকে গেছে। আমাদের রিজার্ভ এখনো যা আছে, তাতে অন্তত এটুকু বলতে পারি, আমাদের এমন কোন সংকট এভাবে নাই। তবে হ্যাঁ, আমরা সব সময় চেষ্টা করি, যে রিজার্ভটা যেন আমাদের ঘরে থাকে, সেদিকে।
শেখ হাসিনা বলেন, যখন বিএনপি ক্ষমতায়, তখন রিজার্ভ কত ছিল? ০.৭৪৪ বিলিয়ন ইউএস ডলার, মানে ১ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে কম। আর এখন আমাদের আছে ৩১ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার। কাজেই এটা নিয়ে দুশ্চিন্তার খুব বেশি একটা কারণ নেই। যে কারণে আমরা বলছি যে আমাদের দেশের যত অনাবাদি জমি, ফসল ফলাব, নিজের খাবার খাব, অন্যের ওপর আর নির্ভরশীল হব না। কারও কাছে হাত পেতে চলব না। কারও কাছ থেকে ভিক্ষা আনব না। নিজের উৎপাদন করে আমরা নিজেরাই চলব। আমাদের খাবারের অভাব হবে না।
প্রস্তুতি থাকায় মোখায় প্রাণহানি হয়নি : বক্তব্যের শুরুতে ঘূর্ণিঝড় মোখার ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাংলাদেশকে রক্ষার জন্য সৃষ্টিকর্তার শুকরিয়া আদায় করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসে যথেষ্ট প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিলাম। আমি নিজে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিয়েছি, নানা নির্দেশনা দিয়েছি। আমরা উপকূলীয় ১৩ জেলায় ৭ হাজার ৪০টি আশ্রয় কেন্দ্র খুলেছিলাম। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোয় সাড়ে ৭ লাখের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় দ্রুত পুনর্বাসন কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের আগামী নির্বাচনী ইশতেহারের ঘোষণাই হবে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’। যদিও এটা আগে বলে দিয়েছি, তবে এটাই হবে আমাদের মেইন। অর্থাৎ বাংলাদেশকে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলব। বাংলাদেশে কোনো দারিদ্র্য থাকবে না, দেশের সব মানুষ উন্নত জীবন পাবে। বিভিন্ন খাতে অতিরিক্ত ভর্তুকি দেওয়া আসন্ন বাজেটে সরকারকে বিপদে ফেলছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ভর্তুকিটাই আমাদের বাজেটে সবচেয়ে বেশি বিপদে ফেলছে। পৃথিবীর কোনো দেশে এ রকম দেয় না। জ্বালানি, বিদ্যুৎ সব খাতে ভর্তুকি দিচ্ছি। বিদ্যুতে ভর্তুকি দিয়ে লাভ কী? যে সবচেয়ে বেশি এয়ারকন্ডিশন চালায় তার লাভ সবচেয়ে বেশি। আমার গরিব মানুষের তো লাভ হয় না। আসলে ভর্তুকিতে লাভবান হচ্ছে বিত্তশালীরা।
সংলাপ নাকচ : দেশে আন্দোলনকারীদের আলোচনায় ডাকা হবে কি না জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেন, কাদের? সেই উত্তরটা পরে দিচ্ছি। আলোচনায় কীসের জন্য ডাকতে যাব? তাদের ডিমান্ডই তো ঠিক নাই। যুক্তরাষ্ট্রে যারা ছিলেন, তখন বৃষ্টি নেমেছিল। আমি ভাবলাম বাংলাদেশের প্রবাসী তারা বৃষ্টিতে ভিজবে তার চেয়ে তাদের ডাকি, কী বলতে চায় শুনি। এখন ঢাকায় বা বাংলাদেশে যারা তাদের যদি বৃষ্টিতে ভেজা শখের মধ্যে থাকে তারা থাকুক।
মহার্ঘভাতা দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, প্রতি বছরের হিসাবমতো ইনফ্লেশন যত বাড়বে তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমরা বেতন বাড়াব। যেহেতু ইনফ্লেশন বেড়ে গেছে, তাই ক্রয়ক্ষমতা অনুযায়ী এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বেতন যেন বাড়তে পারে সেই ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি। বেসরকারি খাতের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা তাদের বিষয়। এটা সরকারের ব্যাপার না। বেসরকারি খাত করোনাভাইরাসের সময় যেন বিপদে না পড়ে তার জন্য প্রণোদনা দিয়েছি। তাদের স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া হয়েছে। সেখানে আমরা ভর্তুকিও দিয়েছি। এ ভর্তুকিটা বাজেটে বিপদে ফেলেছে।
চাকরিতা প্রবেশের বয়সসীমা বাড়বে না : সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানো হবে কি না- জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনার কারণে বয়সসীমা কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। তাদের অনেকেই চাকরি পেয়েও গেছে। বয়সসীমা নিয়ে আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, একবার খুব আন্দোলন হলো। আমরা হিসাব নিলাম। ২৪-২৫ বয়সী ছেলেমেয়ের পরীক্ষার যে ফলাফল আসে… ৩০ বছরে সে কিন্তু ফেল করে। কাজ করার একটা দক্ষতা তো থাকতে হবে। কাজ করারও সময় থাকে।
ঢাকা পুরাটা খালের নেটওয়ার্ক ছিল বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এগুলো রেখেই কিন্তু উন্নয়ন করা যেত। নদীখেকোর কথা বলতে গেলে আগে সামরিক স্বৈরশাসকদের কথা বলতে হয়। আইয়ুব খানের আমলে শুরু, এরপর জিয়াউর রহমান, এরশাদ, খালেদা জিয়া। তারা যে সময়ে এসেছে নদীগুলোর সর্বনাশ করে দিয়ে গেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাসের কাছে পদ্মা বহুমুখী সেতুর একটি পেইন্টিং-ছবি তুলে দেওয়া প্রসঙ্গে বলেন, পেইন্টিংটা আমরা এজন্য নিয়ে গেছি যে, আমাদের দেশে খুব ভালো পেইন্টার আছেন, তারা খুব চমৎকার পেইন্টিং করতে পারেন, সেটা জানানোর জন্য। বিশ্বের কারও যদি পেইন্টিং প্রয়োজন হয়, আমাদের কাছে চাইতে পারবেন। আর পেইন্টিংয়ের বিষয়বস্তুটা হচ্ছে, বাংলাদেশের মানুষের সবচেয়ে প্রিয় জায়গাটা পদ্মা সেতু। এটাই, আর কিছু না।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, দলীয় সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান।