লক্ষ্মীপুরে বন্যায় প্রাণি সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
লক্ষ্মীপুর, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : জেলার ৫টি উপজেলা বন্যার কারণে অবকাঠামো ও খাদ্য বিনষ্টসহ খামারি-গৃহস্থদের পশুপাখির মৃত্যু হয়েছে। এতে খামারিসহ গৃহস্থরা বড় ধরনের আর্থিক বিপর্যয়ে পড়েছেন।
এতে ৮ কোটি ৬৫ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখনো ৫ লাখ ১১ হাজার ১১০টি পশু-পাখি বন্যা কবলিত রয়েছে। জেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগ এক প্রতিবেদনের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতির তথ্যটি নিশ্চিত করছেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বন্যার পানির কারণে জেলার বিভিন্ন স্থানে খামার ও গৃহস্থের ১ লাখ ৬০ হাজার ২১৩টি পশুপাখি মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে ৩৫টি গরু, ১৭৫টি ছাগল, ১৭ টি ভেড়া ও ১টি মহিষ এবং ১ লাখ ৫৯ হাজার ১০টি মুরগী ও ৯৭৫টি হাঁসের মৃত্যু হয়েছে। এতে ২ কোটি ৮৬ লাখ ৩ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। গবাদিপশুসহ ৩০৩টি খামারের অবকাঠামোগত ক্ষতি ৭৩ লাখ ১৫ হাজার টাকা, হাঁস-মুরগীসহ ৪২৩টি খামারের অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে ৩ কোটি ৪৮ লাখ ৮৩ হাজার টাকা। এছাড়া ১ কোটি ৫৭ লাখ ১১ হাজার ৫০০ টাকার পশুপাখির খাদ্য বিনষ্ট হয়েছে বন্যায়।
আরও জানানো হয়েছে- ৯০০ গবাদিপশু ও ১২ হাজার ৯০০ হাঁস-মুরগীকে টিকা প্রদান করা হয়েছে। চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে ৮৪১টি গবাদিপশু এবং ৩০ হাজার ৩৬৫টি হাঁস-মুরগীকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মেঘনা উপকূলীয় এ জেলায় প্রথমে ভারি বর্ষণ ও নদীর তীব্র জোয়ারের কারণে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। প্রথম দিকে রামগতি ও কমলনগর উপজেলার নি¤œাঞ্চল পানিবন্দি ছিল। গত শুক্রবার (২৩ আগস্ট) থেকে ফেনী-নোয়াখালীর বন্যার পানি লক্ষ্মীপুরে চাপ দেয়। এতে জেলার ৫টি উপজেলার নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়ে প্রায় ৭ লাখ ৫০ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়েছে। এসময় প্রায় ৫০ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় কেন্দ্র উঠেছে। চারদিকে পানি থই-থই করছে। অনেক এলাকায় রাস্তার উপরে হাটু, কোমর ও বুক সমান পানি রয়েছে। ঘর-বাড়ির ভিতরেও পানি। এতে পানি ও আবহাওয়া জনিত কারণে ১ লাখ ৬০ হাজার ২১৩টি পশু-পাখি মারা যায়।
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. কুমুদ রঞ্জন মিত্র বাসসকে বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ “বন্যা/অতিবর্ষণ” এর প্রভাবে কারণে লক্ষ্মীপুর জেলায় ৩০৩ টি গবাদিপশুর ও ৪২৩টি মুরগীর খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক গবাদিপশু ও মুরগী মারা গিয়ে খামারিদের বড়ধরণের ক্ষতি হয়েছে। এখনো ৫ লাখ ১১ হাজার ১১০ টি পশু-পাখি বন্যা কবলিত রয়েছে। এতে জেলায় ৮ কোটি ৬৫ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে আমাদের লোকজন কাজ করছেন। ইতিমধ্যে সরকার গোখাদ্যর জন্য নগদ ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ “বন্যা/অতি বর্ষণ এ-র প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতির একটি প্রতিবেদন গত ২৯ আগস্ট চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে।