অর্থ ও বাণিজ্যশীর্ষ নিউজ

ভালবাসা ও মাতৃভাষা দিবসে ১০০ কোটি টাকার ফুল বিক্রির আশায় গদখালির চাষিরা

কেনা জানে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ফুলের মোট চাহিদার ৭০% গদখালি থেকে পূরণ হয়ে থাকে। শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ফুল বেচা-কেনার মৌসুমের শুরুতে আশানুরূপ দাম পেয়ে খুশি যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালির ফুল চাষিরা। এখন ফুলচাষীরা তাকিয়ে আছে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ১৪ ফেব্রুয়ারি ও ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবসের দিকে। চাষীরা আশা করছেন এই দুই দিবসে শত কোটি টাকার ফুল বেচাকেনা হবে।

এ মৌসুমে ১০০ কোটি টাকার ফুল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা তাদের। “ফুলের রাজধানী” খ্যাত গদখালিতে গাছের নিবিড় পরিচর্যা ও বিভিন্ন প্রজাতির ফুল বাজারে এনে বিক্রির জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।

ফুলচাষি ও ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে গত তিন দিনে সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে গোলাপ, গ্লাডিউলাস, চন্দ্রমল্লিকা, রজনীগন্ধা, গাঁদাফুল, জিপসি, রডস্টিক, জারবেরাসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুল।

মৌসুমের শুরুতেই চাষিরা ফুলের বাজার ধরতে বিরামহীন পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন পলাশ বলেন, “এ উপজেলায় ৬৩০ হেক্টর জমিতে ১০-১২ প্রজাতির ফুল চাষ হয়ে থাকে। সবচেয়ে বেশি ফুল চাষ হয়ে থাকে পানিসারা, গদখালি ও নাভারণ ইউনিয়নে। এখানে ৬-৭ হাজার কৃষক সরাসরিভাবে ফুল চাষে সম্পৃক্ত। পরোক্ষভাবে প্রায় এক লাখ নারী-পুরুষ জমি থেকে ফুল কাটা, বাজারে আনা-নেওয়া, বিক্রিসহ এ পেশায় নিযুক্ত।”

রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ফুলের মোট চাহিদার ৭০% গদখালি থেকে পূরণ হয়ে থাকে। এখানকার ফুল চাষ এখন শিল্প হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। ফুল চাষিদের সার্বিক সহযোগিতায় কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়ে থাকে বলে তিনি জানান।

গদখালি এলাকার ফুলচাষি ইসমাইল হোসেন ও শাহজাহান আলী জানান, এ বছর ফুলের উৎপাদন ভালো হয়েছে। দামও আশানুরূপ। মৌসুমের শুরুতে ফুলের বাজার দর ভালো থাকায় খুশি ফুল চাষিরা। শেষ পর্যন্ত বাজার দর ভালো থাকলে বার্ষিক উৎপাদন ও বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে।

চাহিদা থাকায় মহান বিজয় দিবস, আসন্ন বড়দিন, ইংরেজি নববর্ষ, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, বিশ্ব ভালবাসা দিবসসহ অন্যান্য দিবসে ফুলের বাজার নিয়ে আশাবাদী ফুল চাষিরা। বর্তমান দাম অনুযায়ী শেষ পর্যন্ত ফুলের দাম পেলে চাষিরা লাভবান হবেন বলে তারা জানান।

যশোর ফুল উৎপাদন ও বিপণন সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি আব্দুর রহিম বলেন, “এ মৌসুমে গদখালি থেকে ১০০ কোটি টাকার ফুল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে আমরা এগোচ্ছি। বাজারদর এভাবে অব্যাহত থাকলে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে।”

তিনি আরও বলেন, “গত ৩-৪ বছর ফুলের দাম কম থাকায় ফুল চাষিরা যে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিলেন, এবার সেটি পুষিয়ে নিতে পারবেন।”

গদখালির বাজারে বর্তমানে প্রতি পিস গোলাপ ফুল ৮-১০টাকা, জারবেরা প্রতি পিস ১২-১৮ টাকা, রজনীগন্ধা প্রতি পিস ৫-৭টাকা, গাঁদা ফুল প্রতি হাজার ১,০০০ টাকা, গ্লাডিউলাস প্রতি পিস ১০-১৫টাকা, চন্দ্রমল্লিকা প্রতি পিস ৬-৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে তিনি জানান।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button